রাঙ্গামাটি

রাঙ্গামাটি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি একটি পার্বত্য জেলা। এটি বাংলাদেশের বৃৃৃহত্তম জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।

রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা গুলোর মধ্যে একটি এবং আয়তনে বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা। ১০টি ভাষাভাষীর ১১টি জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক কৃষ্টি এবং প্রকৃতির অপার সৃষ্টি এই জেলা বাংলাদেশের পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রাঙ্গামাটি জেলার জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ হলো: কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবন বিহার, শুভলং ঝর্ণা, সাজেক ভ্যালী, নৌ বাহিনীর পিকনিক স্পট, কাপ্তাই বাঁধ ও কর্ণফুলি পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি ভাস্কর্য, উপজাতীয় জাদুঘর, কর্ণফুলি কাগজ কল, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, প্যানোরমা জুম রেস্তোরা, পেদা টিং টিং রেস্তোরা, টুকটুক ইকো ভিলেজ, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার, বনশ্রী পর্যটন কমপ্লেক্স, ডলুছড়ি জেতবন বিহার ইত্যাদি। দর্শনীয় স্থান সমূহের বর্ণনা সহ ঘুরে বেড়ানোর সকল তথ্য যেমন কিভাবে যাবেন, রাঙ্গামাটি হোটেল ও রিসোর্ট, কোথায় খাবেন ও খরচ কোথায় কত সব কিছু নিয়েই আমাদের এই রাঙ্গামাটি ।

বিবিন্ন দর্শনিও এস্থান নাম :

১/ কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র
২/ কাপ্তাই হ্রদ
৩/ ঝুলন্ত সেতু
৪/ শুভলং ঝর্ণা
৫/ হাজাছড়া ঝর্ণা
৬/ পেদা টিং টিং
৭/ টুকটুক ইকো ভিলেজ
৮/ রাইংখ্যং পুকুর
৯/ রাজবন বিহার
১০/ ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার (রাজবাড়ি)
১১/ চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার,
১২/ সাজেক ভ্যালী
১৩/ ন-কাবা ছড়া ঝর্ণা
১৪/ কাট্টলী বিল
১৫/ তিনটিলা বনবিহার
১৬/ রঙরাং পাহাড়
১৭/ জুরাছড়ি
১৮/ দুমলং পর্বত
১৯/ লংগদু
২০/ কমলক ঝর্ণা (সাজেক)
২১/ মুপ্পোছড়া ঝর্ণা
২২/ ধুপপানি ঝর্ণা (বিলাইছড়ি)
২৩/ রাইখং লেক (বিলাইছড়ি)
২৪/ চাকমা রাজার রাজবাড়ি
২৫/ ওয়াগ্গা চা এস্টেট
২৬/ উপজাতীয় যাদুঘর

সাজেক ভ্যালি

সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley), বর্তমান সময়ে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য সাজেক। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হিসাবে খ্যাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট। সাজেকের অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও ভৌগলিক কারণে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার আর দীঘিনালা থেকে ৪০ কিলোমিটার।

কাপ্তাই লেক

পার্বত্য চট্টগ্রামের বুকে প্রকৃতির অপরূপ নৈসর্গিক নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলা। আর কাপ্তাই উপজেলা অনন্য পাহাড়, লেকের অথৈ জলরাশি এবং চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহে। ১১,০০০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই কৃত্রিম হ্রদ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আয়তনে সর্ববৃহৎ। এখানে চোখে পড়ে ছোট বড় পাহাড়, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা, ঝর্ণা আর জলের সাথে সবুজের মিতালী। একদিকে যেমন পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্ভার তেমনি লেকের অথৈ জলে রয়েছে বহু প্রজাতির মাছ ও অফুরন্ত জীববৈচিত্র। লেকের চারপাশের পরিবেশ, ছোট ছোট দ্বীপ, নানাবিধ পাখি এবং জল কেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে প্রতি মূহুর্ত। কৃত্রিম হলেও প্রকৃতি তার সমস্ত রুপে উজাড় করে সাজিয়েছে কাপ্তাই হ্রদকে। সারা বছরই কাপ্তাই লেক (Kaptai Lake) ভ্রমণের জন্য যাওয়া যায় তবে বর্ষায় লেকের পাশের ঝর্ণাগুলোর পরিপূর্ণ রূপের দেখা মিলে।

শুভলং ঝর্ণা

রাঙ্গামাটি সদর হতে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে শুভলং বাজারের পাশেই শুভলং ঝর্ণার অবস্থান। বাংলাদেশের অন্য সকল ঝর্ণার মত শুভলং ঝর্ণাতেও শুকনো মৌসুমে পানি খুব কম থাকে। বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে বিপুল জলধারা কাপ্তাই লেকে আছড়ে পড়ে। এছাড়া শুভলং ঝর্ণা দেখতে যাওয়ার পথের সৌন্দর্য্য আপনাকে আবেগময় করে তুলতে পারে। দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া লেক দেখে থাইল্যান্ড বলে ভ্রম হতে পারে!

শুভলং ঝর্ণার সৌন্দর্য্য পর্যটকদের বিমোহিত করে। পাহাড়ের উপর থেকে পাথুরে মাটিতে ঝর্ণাধারা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। অতিরিক্ত কাপড় সাথে থাকলে ঝর্ণার শীতল পানিতে স্নান করে শরীর জুড়িয়ে নিতে পারেন। শুভলং ঝর্ণার কাছেই প্রায় ২০০০ ফুট উঁচু ‘শুভলং পাহাড়’ বা ‘টি এন্ড টি পাহাড়’ রয়েছে। পাহাড় চূড়ায় রয়েছে সেনাক্যাম্প ও একটি টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার। পাহাড়ে ওঠার জন্য রয়েছে চমৎকার সিঁড়ি। পাহাড়ের উপর থেকে দেখলে মনে হবে সমস্ত রাঙ্গামাটি জেলা কাপ্তাই লেকের পানির উপর ভেসে আছে।

কংলাক পাহাড়

কংলাক পাহাড় বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি সাজেক ভ্যালির সর্বোচ্চ চূড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট।

আরণ্যক হলিডে রিসোর্ট

রাঙ্গামাটি জেলার সেনানিবাস এলাকায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্মিত পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্রের নাম আরণ্যক হলিডে রিসোর্ট (Aronnak Holiday Resort)। কাপ্তাই হ্রদে ঘেরা শান্ত ও ছিমছাম পরিবেশের আরণ্যক রিসোর্টটি সুনিপুণ ভাবে ছবির মত সাজানো গোছানো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কতৃক পরিচালিত আকর্ষনীয় এই রিসোর্টে রয়েছে ছোটদের জন্য বিভিন্ন রাইড, হ্যাপি আইল্যান্ড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, পেডেল বোট, সুইমিং পুল, রেস্টুরেন্ট এবং খেলাধুলার ব্যবস্থা।

কাপ্তাই হৃদের পাড়ে সবুজ ঘাসে মোড়ানো আরণ্যক রিসোর্টের প্রথম অংশে আছে নান্দ্যনিক ফুলের বাগান, নানা রকম ভাস্কর্য, রিসোর্ট, স্পিডবোট ও প্যাডেল বোটে চড়ার সুবিধা এবং কফি শপ। রিসোর্ট রুম বুকিং ছাড়াও চাইলে আপনি আরণ্যক রিসোর্ট এর সবকিছু ঘুরে দেখতে পারবেন। আরণ্যক হলিডে রিসোর্টের দ্বিতীয় অংশের হ্যাপি আইল্যান্ডে আছে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, পার্ক, রাইডার, বোট রাইডিং এবং লেকভিউ সুইমিং পুল। হ্যাপি আইল্যান্ডের ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ টিকেটের মূল্য ১৫০ টাকা। প্রতি সোমবার শুধুমাত্র দর্শনার্থীদের জন্যে প্রবেশ বন্ধ থাকে।\

Scroll to Top
Scroll to Top